রিমান্ডে মমতাজ

রিমান্ডে মমতাজ

হত্যা মামলায় চার দিনের রিমান্ড শেষে মানিকগঞ্জ-২ (সিঙ্গাইর ও হরিরামপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমকে হামলা-ভাঙচুরের মামলায় দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার দুপুরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মমতাজকে হাজির করা হলে বিচারক তাঁকে দুই দিনের রিমান্ডে নেওয়ার নির্দেশ দেন।

মানিকগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক আবুল খায়ের প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুরে সিঙ্গাইর থানায় করা হত্যা মামলায় চার দিনের রিমান্ড শেষে মমতাজ বেগমকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে হরিরামপুর থানায় করা হামলা, মারধর ও ভাঙচুরের মামলায় আগে ধার্য করা দুই দিনের রিমান্ড কার্যকরের জন্য থানায় পাঠানো হয়।

আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মমতাজের বিরুদ্ধে সিঙ্গাইর থানায় একটি হত্যা মামলা এবং হরিরামপুর থানায় হামলা, মারধর ও বসতবাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে আরেকটি মামলা করা হয়। দুই মামলায় ২২ মে তাঁকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে বিচারক হত্যা মামলায় চার দিন এবং ভাঙচুরের মামলায় দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে ওই দিন তাঁকে কাশিমপুর মহিলা কারাগারে নেওয়া হয়।

গত মঙ্গলবার হত্যা মামলায় শুনানি থাকায় মমতাজকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালতের নির্দেশে সিঙ্গাইর থানায় করা মামলায় আগে ধার্য করা চার দিনের রিমান্ড কার্যকর করার জন্য থানায় পাঠানো হয়। হত্যা মামলার রিমান্ড শেষে আজ তাঁকে হরিরামপুর থানায় করা হামলা, মারধর ও ভাঙচুরের মামলায় আগে ধার্য করা দুই দিনের রিমান্ড কার্যকর করার জন্য থানায় পাঠানো হয়।

এদিকে গত দুই দফায় মমতাজকে আদালতে হাজির করা হলে দুই দফায়ই আদালত প্রাঙ্গণে মমতাজকে ডিম নিক্ষেপ করেন বিএনপির অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। পুলিশ চেষ্টা করেও এই পরিস্থিতি এড়াতে পারেনি। তবে আজ মমতাজকে এই পরিস্থিতিতে পড়তে হয়নি।

সিঙ্গাইর থানায় হত্যা মামলা হলেও মমতাজকে হরিরামপুর থানায় নেওয়া হয়। ওই থানাতেই জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। এ ব্যাপারে সিঙ্গাইর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌফিক আজম প্রথম আলোকে বলেন, নিরাপত্তার স্বার্থে এবং যেহেতু হরিরামপুর থানার আরেক মামলায় মমতাজকে রিমান্ড দেওয়া হয়, এ কারণে হরিরামপুর থানায়ই হত্যা মামলায় রিমান্ডে নিয়ে তাঁর বক্তব্য শোনা হয়েছে।

হত্যা মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি হরতালের সমর্থনে মানিকগঞ্জ-সিঙ্গাইর-হেমায়েতপুর সড়কের গোবিন্দল নতুন বাজার এলাকায় মিছিল বের করেন ইসলামি সমমনা দলগুলোর নেতা-কর্মীরা। এতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ছোড়া গুলিতে গুলিবিদ্ধ হয়ে বাদীর ছেলে নাজিম উদ্দিন মোল্লাসহ চারজন নিহত হন। এ ঘটনায় গত ২৫ অক্টোবর উপজেলার গোবিন্দল গ্রামের মো. মজনু মোল্লা বাদী হয়ে সিঙ্গাইর থানায় হত্যা মামলা করেন। মামলায় মমতাজকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের ১০৯ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়।

হামলা-ভাঙচুরের মামলার এজাহারে বলা হয়, ২০২২ সালের ৩০ মে সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খানের উপজেলার বয়ড়া গ্রামের বাসভবনে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বক্তব্য চলাকালে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা হামলা করেন। এ সময় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খানের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়। এ ঘটনায় গত ২৯ অক্টোবর হরিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মো. দেলোয়ার হোসেন একটি মামলা করেন। মামলায় মমতাজকে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগের ৮৬ নেতা-কর্মীকে আসামি করা হয়।